স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বরিশালের সুন্দর, স্বাভাবিক, পরিচ্ছন্ন পরিবেশটা কেমনভাবে যেন উধাও হয়ে গেছে। আশ্চর্য লাগছে, কয়েকদিনের ব্যবধানে একটা শহরের নির্বাচনের পরিবেশ এভাবে কিভাবে নষ্ট হয়। আগেও নির্বাচন হয়েছে, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। কিন্তু বরিশালে কেমন একটা অন্য ধরনের ভাব হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে এ বরিশাল শহরে কোনো একটা আসুরিক শক্তির আবির্ভাব হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল নগরের সদর রোডের বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে ধানের শীষের সমর্থনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, নির্বাচন একেবারেই সুন্দর হবে তা আমরা কখনোই ভাবি না। নির্বাচন হবে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। তিনি আরও বলেন, বরিশালে একটি সম্প্রদায়ের কাছে আজ উৎসবের পরিবেশ রয়েছে, সেটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ সম্প্রদায়ের। তাদের উৎসবের জন্য অন্য কারো ক্ষতি হোক বা হচ্ছে এটা তারা ভাবছে না। মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা বলতে পারেন আমরা কাউন্সিলর প্রার্থী দেয়নি, দেব কিভাবে, যাদের দেব তাদের তো জেলে পুরে দেবে। এখন তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে, হামলা হচ্ছে, বাড়িতে থাকতে পারছেন না। আর যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের প্রথমে টাকা-পয়সার লোভ দেখানো হয়েছে, পরে জোর-জবরদস্তি, রিজিকের ওপরেও হাত দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ এখন পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে। এজন্য আমাদের অনেক প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন, নয়তো লুকিয়ে আছেন। কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের যুবদলের সহ-সভাপতিকে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। আবার সেই মামলায় অজ্ঞাত ১০ জন রাখা হয়েছে। মামলা হলে আসামি তো হবেই, তবে নামধারী হলে তো একটা বিষয় ছিল। এখন অজ্ঞাত হওয়ায় কর্মীরা সবাই আতঙ্কে আছেন। কাকে কখন ধরে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ আগে নগরের কাউনিয়া হাউজিং এলাকায় লিফলেট বিতরণ করার সময় পুলিশ কর্মীদের কাজে বাঁধা দিয়েছে। বুধবার বিকেলে একটা পথসভা করছিলাম, দু’জন পুলিশ এসে বললো করতে পারবো না। কেন পারবো না জানতে চাইলে উত্তর দিলেন না। আমরা কি কোনো পরাধীন দেশে বাস করি যে কথা বলতে পারবো না।
মির্জা আব্বাস বলেন, গত রাত থেকে বরিশালে একটা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। একটা আসুরিক শক্তি নির্বাচনী পরিবেশটা ভৌতিক অবস্থায় পরিণত করেছে। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আশা করেছিলাম একটা লেভেল প্লেইং ফিল্ড হবে। কিন্তু তাদের কথা ঠিক নেই। এখন নির্বাচন কমিশন কমপ্লেইনও নিতে চায় না। ‘আওয়ামী লীগ গাড়িতে স্টিকার লাগাচ্ছে, ঠেলাগাড়িতে করে নৌকা নিয়ে যাচ্ছে, নৌকার গেট সাজানো হচ্ছে, নৌকা বানিয়ে আলোকসজ্জা করেছে। তারা আচরণবিধি মানছে না। কিন্তু তাদের কিছু হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী অত্যাচারকে পরাস্থ করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অটুট মনোভাব নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, কাজ করে যাবে। বরিশালে বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ারকে অনেক বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। গ্রেফতারটা আমি মনে করি বিএনপি নেতা-কর্মীদের জন্য খুশির সংবাদ। কারণ আওয়ামী লীগ বিএনপি নেতা-কর্মীদের এতোটাই ভয় পেয়েছে যে, বিএনপির লোক বাইরে থাকলে তারা নির্বাচনে কারচুপি করতে পারবে না। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মো. মজিবর রহমান সরওয়ার, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান আক্তার শিরিনসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply